Skip to main content
ইপসা জাতিসংঘের ”ইকোনোমিক এন্ড সোস্যাল কাউন্সিল” এর স্পেশাল কন্সালটেটিভ স্টাটাস প্রাপ্ত একটি সংগঠন

উন্নয়ন কর্মকান্ডে নারীর অংশগ্রহনের মাধ্যমে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব

 বাঁশখালীতে ইপসার সেলাই মেশিন বিতরণ অনুষ্ঠানে সাংসদ মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী

‘নারী’ শুধুমাত্র নারী হয়ে জন্ম নেয়ার জন্যই অর্থাৎ তার লিঙ্গীয় পরিচয়ের কারণেই বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ায় নির্যাতনের সম্মুখীন হয়। নির্যাতনের কারণে নারীরা তার খাদ্য, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নিরাপত্তা, দৈহিক এবং মানসিক বিকাশ, রাজনীতি এবং কর্মক্ষেত্রে অংশগ্রহণসহ সকল বিষয়ে মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাই জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত একজন নারীকে বয়স ভেদে, সম্পর্কের ভিন্নতায়, স্থানের তারতম্যতায় নানামুখি নির্যাতনের শিকার হতে হয়। নিরক্ষর, শিক্ষিত, ধনী, গরীব, গ্রামীন, শহুরে, শিশু কিংবা বৃদ্ধ নির্বিশেষে নারীরা নির্যাতনের শিকার। পরিবার, সমাজ এবং রাষ্ট্র বিভিন্ন বিধি-বিধান দ্বারা নারীর এই নাজুকতাকে যুগযুগ ধরে টিকিয়ে রেখেছে। পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক নারী ও কিশোরী পারিবারিক ও সামাজিক বৈষম্যের অব্যাহত শিকার। বাংলাদেশের অর্ধেক জনসংখ্যা নারী। এ অর্ধেক জনগোষ্ঠীকে উন্নয়ন কার্যক্রমের বাইরে রেখে দেশের উন্নয়ন কখনও সম্ভব নয়। নারীদেরকে উন্নয়নের মূল স্রোতধারায় সম্পৃক্ত করতে হবে।

উন্নয়ন কার্যক্রমসহ প্রতিটি সিদ্ধান্ত গ্রহন প্রক্রিয়ায় নারীর কার্যকরী অংশগ্রহন নিশ্চিত করতে হবে এবং এজন্য নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন আরও বেশী প্রয়োজন। পাশাপাশি নারী যদি অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয় তাহলে সিদ্ধান্ত গ্রহনসহ পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের সার্বিক উন্নয়নে সে অবদান রাখতে পারে। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাসমূহ সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডের পাশাপাশি দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। সরকারের রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নে বিশেষ করে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য মাত্রা-এমডিজি’র লক্ষ্যার্জনে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা বা এনজিওসমূহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। নারীর আয়-উর্পাজন দেশের উন্নয়নে অবদান রাখেছে বিশেষ করে ক্ষুুদ্র নারী-উদ্যোক্তা উন্নয়ন দেশের উন্নয়নের অংশীদার।

নারীর প্রতি নির্যাতন-বৈষম্য কমিয়ে আনতে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির ইতিবাচক পরিবর্তন প্রয়োজন। দেশের উন্নয়নে নারীর অবদানকে আমাদেরকে স্বীকার করতে হবে। বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশন-বিএনএফ’র সহযোগিতায় “দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন” প্রকল্পের আওতায় এবং ইপসা’র আয়োজনে ক্ষুদ্র নারী-উদ্যোক্তাদের সেলাই প্রশিক্ষণের সমাপনী ও সেলাই মেশিন বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম ১৬ বাঁশখালী আসনের সাংসদ মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী এমপি।

বাঁশখালীর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফ আহমদ খান সভাপতিত্বে এবং ইপসা বাঁশখালীর ফিল্ড অফিসার কল্যাণ বড়ুয়ার সঞ্চালনায় উক্ত সেলাই প্রশিক্ষণের সমাপনী ও সেলাই মেশিন বিতরণ অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ইপসা’র প্রোগ্রাম ম্যানেজার মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম। উক্ত অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন এবং বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল গফুর। উপজেলা প্রকল্পনা বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ মাছুদুর রহমান, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শাকেরা শরীফ। মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ নুরুল ইসলাম, আওয়ামীলীগ নেতা শেখ সেলিমুল হক চৌধুরী, শ্যামল দাশ, অধ্যাপক তাজুল ইসলাম, বাঁশখালী ঠিকাদার সমিতির সভাপতি ইব্রাহিম আল হোসাইন, কাউন্সিলর মিলন বড়ৃয়া, ইউপি সদস্য আবদুল্লাহ আল মামুন প্রমুখ।

এছাড়া সাংবাদিক ও এনজিও সংগঠনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। প্রধান অতিথি আরও বলেন, দেশের আপামর উন্নয়ন ঐ দেশের সকল জনগণের সমন্বিত প্রয়াস। সেই লক্ষ্যেই আন্তর্জাতিক আইন নীতি, পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা হয়ে থাকে। বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর প্রায় অর্ধ শতাংশ নারী এবং আমাদের সংবিধানের ২৭ নং ধারায় নারীর আইনগত সমঅধিকারের কথা বলা হয়েছে। এই অর্ধ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে উন্নয়ন কর্মকান্ডের বাইরে রেখে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন কখনও সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, বাঁশখালীর নারীদের উন্নয়নে শুরু থেকেই ইপসা বিভিন্ন সমাজ উন্নয়ন কার্যক্রম বা¯Íবায়ন করে আসছে। সেজন্য তিনি ইপসাকে ধন্যবাদ জানান এবং ভবিষ্যতেও বাঁশখালীতে ইপসা আরও সমাজ উন্নয়নমূলক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এখানে উল্লেখ্য যে, ইপসা এই ব্যাচে ১৫ জন ক্ষুদ্র নারী-উদ্যোক্তাকে সেলাই প্রশিক্ষণ করা হয় এবং প্রশিক্ষণ শেষে এই সেলাই মেশিন বিতরণ অনুষ্ঠানে ১৫ জনকে সেলাই মেশিন বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ও অন্যান্য অতিথিবৃন্দ এ সেলাই মেশিন বিতরণ করেন।