Skip to main content
ইপসা জাতিসংঘের ”ইকোনোমিক এন্ড সোস্যাল কাউন্সিল” এর স্পেশাল কন্সালটেটিভ স্টাটাস প্রাপ্ত একটি সংগঠন

খাগড়াছড়িতে “যুব উৎসব-২০১৮” অনুষ্ঠিত

খাগড়াছড়ি জেলা পানছড়ি উপজেলার ১০-২৪ বছর বয়সী কিশোর-কিশোরী ও যুব-যুবাদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য অধিকার সহায়ক পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে আয়োজন করা হয়েছে দিনব্যাপি “যুব উৎসব-২০১৮”। উৎসবটি আয়োজন করেছে ইপসা-ইয়ং পাওয়ার ইন সোশ্যাল এ্যাকশন ও সহযোগিতা করেছে প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ। পানছড়ি উপজেলার ১৫ টি যুব ক্লাবের সৃষ্টিশীল নানা উপকরণ দিয়ে সাজানো হয়েছিল মেলা প্রাঙ্গন।  গত ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ইং সকাল ০৯ টা থেকে পানছড়ি টাউন হলে উৎসব মূখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয় যুব উৎসব-২০১৮।

দিনের শুরুতে পানছড়ি উপজেলার ০৫ টি ইউনিয়নের যুব-যুবাদের অংশগ্রহণে উৎসব প্রাঙ্গন নান্দনিক সাজে সাজানো হয়। সমবেত সুরে জাতীয় সংগীত গেয়ে ও রঙ্গিন কাজের ফটকা ফাটানোর মাধ্যমে উৎসবের উদ্বোধন ঘোষণা করেন পানছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব আবুল হাশেম, উপজেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান লোকমা হোসেন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রত্না তঞ্চঙ্গ্যা।

এর পর পরই আলোচনা সভা শুরু হয়। এবারের আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়েছিল উৎসবে অংশগ্রহণকারী ছেলে মেয়েদের প্রশ্ন দিয়ে। তারা লিখিত চিরকুটের মাধ্যমে নিজেদের মনের অনেক জিজ্ঞাসা জানতে চেয়েছিলেন আমন্ত্রিত অতিথিদের কাছে, সেসব জিজ্ঞাসার উত্তর দিয়েই উৎসবের অতিথিরা আলোচনা করেন তাদের বেড়ে উঠার গল্প। সে রকমই কিছু প্রশ্ন, “ সম্মানিত ইউএনও স্যার আপনি কি আপনার বয়ঃসন্ধিকালে নিজেকে হিরো, হিরো মনে করতেন? তখন আপনি কি করতেন। আপনি ইউএনও হওয়ার জন্য কি কি করেছেন? আপনার ছেলে মেয়েদের বয়সন্ধিকালে আপনি কি তাদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখবেন এবং সেটি কি রকম হবে??”

মেলায় উপসি’ত কিশোর-কিশোরী ও যুব-যুবাদের প্রশ্নোত্তর পর্বের আলোচনা পর অনুষ্ঠিত হয় পানছড়ি উপজেলার প্রতিটি ওয়ার্ডে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গঠিত “ বাল্যবিবাহ ও যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ স্কোয়াড সমাবেশ। উক্ত স্কোয়াডে যুব ক্লাবের সদস্যরাও অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। এই সমাবেশে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের পরিচালনায় পানছড়ি উপজেলায় বাল্যবিবাহ ও যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ স্কোয়াডের লক্ষ্য উদ্দেশ্য ও করনীয় সম্পর্কে অবহিত করা হয় এবং সমসমায়িক পরিসি’তি নিয়ে আলোচনা হয়।

মধ্যাহ্নভোজের পর  শুরু হয় পরিবর্তনের গল্প বলা প্রতিযোগিতা। এই প্রতিযোগিতায় ছেলে-মেয়েরা তাদের নিজেদের পরিবর্তনের গল্প উপস্থাপন করে এবং যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য অধিকার সহায়ক প্রকল্প কিভাবে তাদের এই পরিবর্তনে ভূমিকা রেখেছে তা তুলে ধরে। তাদের মধ্যে সেরা পাঁচটি পরিবর্তনের গল্পকে বাছাই করে পুরস্কৃত করা হয়।

শেষে উৎসবে অংশগ্রহণকারী যুব-যুবাদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় ছিল গান, নাচ, কৌতুক ও কবিতা আবৃত্তি। এরপর মেলায় স্টল নিয়ে অংশ গ্রহণকারী প্রতিটি যুব ক্লাবকে ধন্যবাদপত্র প্রদান করা হয়।

দিন ব্যাপি এই যুব মেলা আয়োজনের মাধ্যমে পানছড়ি উপজেলার ১৫ টি যুব ক্লাবের সদস্য বৃন্দ একত্রিত হয়ে তাদের অভিজ্ঞতা ও মতামত বিনিময় করার সুযোগ পেয়েছে। তারা উৎসব মূখর আনন্দঘন পরিবেশের মধ্য দিয়ে নিজেদের সৃজনশীল দক্ষতার মাধ্যমে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য অধিকার বিষয় তথ্য উপস্থাপন করেছে এবং এর ফলে সাধারণ জনগণ  যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ে চিন্তা করার সুযোগ পেয়েছে। এই যুব মেলার মাধ্যমে ১০-২৪ বছর বয়সী কিশোর-কিশোরী ও যুব-যুবাদের জন্য যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য অধিকার সহায়ক পরিবেশ তৈরি, সঠিক ও নির্ভূল তথ্যে প্রবেশগম্যতা এবং তাদের সেবাপ্রাপ্তি ইত্যাদি বিষয়ে উপজেলার সর্বস্তরের জনগণকে উদ্বুদ্ধ করা এবং যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ে স্বচ্ছ ধারনা তৈরি করা সম্ভব হয়েছে।