ভাসমান যৌনকর্মীদের মধ্যে এইচআইভি এইডস প্রতিরোধ কর্মসূচী
কর্ম এলাকা
চট্টগ্রম সিটি কর্পোরেশন
সময়কাল
২০০২-২০১৪
বর্তমান পরিস্থিতি: বাংলাদেশ এখনও এইচআইভি,এইডস সংক্রমনের জন্য কমঝূঁকিপূর্ণ এলাকা হিসাবে বিবেচিত হলে ও এই ঝুঁকি বৃদ্ধির যথেষ্ঠ কারণ এখানে বিদ্যমান। সংক্রমনের ঝুঁকি বৃদ্ধির কারণ হিসাবে উল্লেখ করা যায় ভাসমান যৌনকর্মীদের প্রতি বৈষম্য ও প্রচলিত কুসংষ্কার, যা তাদেরকে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী হিসাবে বিবেচিত করে। চট্টগ্রামে যৌনব্যবসা সক্রিয় হওয়ার দরুন ভাসমান যৌনকর্মীদের পরিস্থিতি বিবেচনা করা এবং এইচআইভি, এইডস ও যৌনরোগ সম্পর্কে সচেতন করা পাশাপাশি তাদের পরিচর্যা, রেফারেল ওসার্বিক সহায়তার আওতায় আনা খুবই গুরুত্বপূর্ন।
চট্টগ্রম শহরে আনুমানিক ৪০০০ ভাসমান যৌনকর্মী রয়েছে।
পদক্ষেপ
এইচআইভি,এইডস রোধকল্পে চট্টগ্রাম শহরে ভাসমান যৌনকর্মীদের জন্য দু’টি মধুমিতা সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। এই পরিস্থিতি মোকাবেলার কৌশল হিসাবে তিনটি প্রধান ও গুরুত্বপূর্ন কার্যক্রম হল:
এডভোকেসী ও শিক্ষা
এইচআইভি এইডস সম্পর্কে জনগনের সহায়তা প্রদান ঝুঁকপূর্ণ জনগোষ্ঠীর অবস্থার গুনগত পরিবর্তন নির্দেশ করে। সম্ভাব্য সমস্যা সমাধানে ইপসা বিভিন্ন ভাবে সহায়তা প্রদান করে যেমন:
জনসচেতনতামূলক উপকরন বিতরন
যৌনকর্মী ও তাদের ক্লায়েন্টদের সাথে এইচআইভি,এইডস ওযৌনরোগ বিষয়ে ওয়ার্কশপ/সভা পরিচালনা
এইচআইভি,এইডস ওযৌনরোগ বিষয়ে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে বিশ্ব এইডস দিবসের কার্যক্রম
আয়োজন করা।
প্রকল্প সহায়তাকারী টীম(পিএফটি) গঠন।
প্রতিরোধ
যৌনকর্মী ও তাদের ক্লায়েন্টদেরকে যথাযত শিক্ষা দানের মাধ্যমে এইচআইভি,এইডস প্রতিরোধ কার্যক্রম পরিচালিত হয়,এর মধ্যে রয়েছে:
কৌশলগত আচরন পরিবর্তন ওয়ার্কশপ,যৌনকর্মী ও তাদের ক্লায়েন্টদের সাথে যৌনরোগ ও এইচআইভি,এইডস বিষয়ে একক আলোচনা যেমন(কনডম প্রদর্শন) যা তাদের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদী সচেতনতা নিশ্চিত করে
প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ নিশ্চিত করার লক্ষে যৌনকর্মী ও তাদের ক্লায়েন্টদের মধ্যে এ পর্যনত্দ ৬৮৩৫৭০ কনডম এবং ১২০০০ লুব্রিকেণ্ট বিতরন করা হয়েছে। যৌনকর্মীদেরকে ক্ষমতায়ন ,কারিগরী প্রশিক্ষণ ও বয়ষ্ক শিক্ষা ইত্যাদি ওয়ার্কশপের মাধ্যমে মানসিক সহযোগীতা প্রদান করা হয়।
চিকিৎসা সেবা
অবশেষে,অভিজ্ঞ ডাক্তার ও মাইক্রোবায়োলজিস্ট এর মাধ্যমে বিনামূল্যে যৌনরোগের চিকিৎসা ও এইচআইভি পরীক্ষার সুযোগ যৌনকর্মীদের ভবিষ্যৎ আশার সঞ্চার করেছে। পাশাপাশি অন্যান্য সেবা,যেমন:
প্রি এবং পোষ্টটেষ্ট কাউন্সেলিং
এইচআইভি পরীক্ষা ও একই দিনে ফলাফল প্রদান
কাউন্সেলিং ও এইচআইভি পরীক্ষায় উদ্বুদ্ধ করন
এইচআইভি সংক্রমিত ব্যক্তিকে পরিচর্যা ও সহযোগীতার জন্য সেবাদানকারী সংস্থায় প্রেরণ।
ফলাফল
বাংলাদেশে বিশ্ব এইডস দিবস উদযাপনকারী প্রথম বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা হিসাবে ইপসা এই কার্যক্রম শুরু করে। প্রাথমিক ভাবে চট্টগ্রাম শহরের ২০০০জন যৌনকর্মী ও ২৫০০০জন ক্লায়েন্ট কে লক্ষ্য করে এই কার্যক্রম শুরু হলে ও এ পর্যনত্দ এই প্রকল্পের আওতায় ২৮০০জন যৌনকর্মী ও ৩২৭১৩ জন ক্লায়েন্ট সেবা গ্রহণ করেছে!
বর্তমানে এই প্রকল্প প্রত্যেক যৌনকর্মীর জন্য যৌনরোগের চিকিৎসা সেবা প্রদান করছে। একটি চলমান প্রক্রিয়া হিসাবে প্রকল্পের নিয়মিত কার্যক্রম চিকিৎসা সেবা ছাড়া ও যৌনকর্মীদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে এই প্রকল্প বিভিন্ন কার্যক্রমকে উৎসাহিত করছে,এর মধ্যে রয়েছে অপ্রাপ্ত বয়ষ্ক যৌনকর্মীদের পুনর্বাসন,যৌনকর্মীদের সনত্দানদের জন্য শিক্ষা এবং তাদের জন্য আয়মূলক দক্ষতা বৃদ্ধি প্রশিক্ষণ।
আমরা যৌনকর্মীদের মধ্যে সঞ্চয় কার্যক্রম পরিচালনা করছি,বর্তমানে আমাদের দু’টি সেন্টারে মোট ৬০ জন এই সমিতির সদস্য, তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে সমিতি ঋণ প্রদান করছে। ইপসা অনুধাবন করছে যে শুধু যৌনকমর্ীদের নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করলে চলবে না তাদের কায়েন্টেদের জন্য ও মধুমিতা সেন্টার শুরু করা দরকার।