শিশুশ্রম ছেড়ে বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া শিশুদের মাঝে ইপসা’র শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ

শিশুশ্রম ছেড়ে বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া কক্সবাজারের ৮৯ শিশুদের মাঝে শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ করেছে স্থায়ীত্বশীল উন্নয়নের জন্য সংগঠন ইপসা। আন্তর্জাতিক সংস্থা সলিডার সুইসের সহযোগিতায় পরিচালিত ইপসা’র ফ্রি কিডস প্রকল্পের এর পক্ষ থেকে এ সকল শিক্ষা সামগ্রী বিতরন করা হয়।
কক্সবাজারের নাজিরারটেকে প্রকল্পের আওতাধীন ইপসার মুক্তমনন লার্নিং সেন্টারে শিক্ষাসামগ্রী বিতরন অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। এ সময় শিক্ষার্থীদের মাঝে স্কুলের ব্যাগ, জুতা, খাতা, পেন্সিল, পানির বোটল, ইরেজার বিতরন করা হয়।
শিক্ষাসামগ্রী বিতরন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার সদর উপজেলার শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুর রহমান। অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন সমাজ সেবা কর্মকর্তা কৌশিক খান, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শন কর্মকর্তা ফজলুর রহমান, শ্রম পরিদর্শন কর্মকর্তা আহমেদ উল্লাহ। সভায় সভাপতিত্ব করেন ইপসা’র এডভোকেসি ফোকাল ও প্রকল্প সমন্বয়কারী মুহাম্মদ আলী শাহীন।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শিক্ষা কর্মকর্তা শিশুদের উদ্দেশ্যে বলেন, শিক্ষার বিকল্প নেই। তোমাদেরকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে হলে পড়াশোনা শিখতে হবে। এ সময় তিনি শিশুশ্রম নিরসনে ভূমিকার জন্য ইপসা ও দাতা সংস্থা সলিডার সুইসকে ধন্যবাদ জানান।
সমাজসেবা কর্মকর্তা কৌশিক খান শিশুদের জন্য সরকার গৃহিত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সু্বিধাবঞ্চিত মানুষদের জন্য ইপসা যে পদক্ষেপ নিচ্ছে প্রশংসার দাবি রাখে।
শ্রম পরিদর্শন কর্মকর্তা ফজলুর রহমান ও আহমেদ উল্লাহ নিজেদের অবস্থান থেকে শিশুশ্রম নিরসনে আইনী পদক্ষেপ নিয়ে সচেতনতামূলক বক্তব্য রাখেন এবং ইপসা ঃ সলিডার সুইস এর পদক্ষেপের প্রশংসা করেন।
সভাপতির বক্তব্যে ইপসা’র এডভোকেসি ফোকাল ও প্রকল্প সমন্বয়কারী মুহাম্মদ আলী শাহীন বলেন, শিশুশ্রম একটি অপরাধ। সরকারের আইনের সাথে সঙ্গতি রেখে ইপসা এ বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করে আসছে। শিশুশ্রম নিরসনে নানা দিক বিবেচনা করে আমরা কাজ করছি।
অনুষ্ঠান শেষে কর্মকর্তারা কক্সবাজারের নাজিরারটেকে বিভিন্ন শুঁটকি কারখানা পরিদর্শন করেন এবং কারখানা মালিকদের শিশুশ্রমের আইনগত দিক নিয়ে সতর্ক ও সচেতন করেন।
উল্লেখ্য শিশুশ্রম নিরসনে দাতা সংস্থা সলিডার সুইস এর অর্থায়নে দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রাম, সীতাকুণ্ড ও কক্সবাজারে কাজ করছে ইপসা’র ফ্রি কিডস প্রজেক্ট।
ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রমে জড়িত মাঠ পর্যায়ের শিশুদের স্কুলে ভর্তি করানো, তাদের শিক্ষার যাবতীয় খরচ বহন করা, নিয়মিত ফলোআপ করা, প্রকল্পের আওতাধীন সেন্টারগুলোতে শিশুদের শিক্ষা ও বিনোদনের ব্যবস্থা করা, শিশুদের অভিভাবকদের লাইভলিহুড ট্রেনিং করানো, ভোকেশনাল ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে চৌদ্দ বছরোর্ধ্ব শিশুশ্রমিকদের দক্ষ করে গড়ে তুলে বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা, শিশু সুরক্ষা বিষয়ে শিক্ষক কর্মশালার মাধ্যমে শিক্ষকদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করা সহ নানা বিষয় নিয়ে কাজ করছে ইপসা ফ্রি কিডস্ প্রজেক্ট।