করোনা ভাইরাস এর বিস্তার প্রতিরোধে ইপসা ফেয়ারার লেবার মাইগ্রেশন প্রকল্পের কার্যক্রম
বিশ্বব্যাপী প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস এর বিস্তার প্রতিরোধে ইপসা ফেয়ারার লেবার মাইগ্রেশন প্রকল্পের গ্রিভেন্স ম্যানেজমেন্ট কমিটি (জিএমসি), যুব স্বেচ্ছাসেবক ও প্রকল্প কর্মকর্তারা তাদের এলাকায় (রাঙ্গুনিয়া, সন্দ্বীপ, চট্টগ্রাম ও সদর উপজেলা কক্সবাজার) ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছেন। উদ্যোগের মধ্যে রয়েছেন, করোনা ভাইরাস এর বিস্তার প্রতিরোধে জনসচেতনতা সৃষ্টি (সরাসরি ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মাধ্যমে), জরুরী খাবার বিতরণ, নগদ অর্থ বিতরণ, স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়ক দ্রবাদি বিতরণ ও সরকারের সাথে সমন্বয়করন ও লিংকেজ স্থাপন করছেন।
সন্দ্বীপ, চট্টগ্রামঃ
– ইপসা জিএমসি সদস্যবৃন্দ সরকারী ত্রাণ সামগ্রীর বিতরণের পাশাপাশি এলাকার ব্যবসায়ী ও বিত্তবান মানুষ হতে আর্থিক অনুদান সংগ্রহ করে করোনায় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করছেন ।
– ইপসা যুব স্বেচ্ছাসেবকগণ উপজেলার বিভিনড়ব জায়গায় মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সাবান ও লিপলেটসহ প্রয়োজনীয় জিনিস জনসাধারণের নিকট বিতরণ করেছেন।
রাঙ্গুনীয়া, চট্টগ্রামঃ
– ইপসা ফেয়ারার লেবার মাইগ্রেশন প্রকল্প রাঙ্গুনিয়া উপজেলার শরফভাটা ইউনিয়ন ও রাঙ্গুনিয়া পৌরসভা জিএমসি সদস্য ও যুব সদস্যরা বিশ্বব্যাপী প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস এর বিস্তার প্রতিরোধে মানুষের মধ্যে ব্যাপক সচেতনতার পাশাপাশি নগদ অর্থ ও জরুরী খাদ্য বিতরণ করছেন যেমন;
– ইপসা জিএমসি সদস্য পলাসী মূৎসুদ্দি সরকারী ত্রাণের সাথে এলাকার মানুষ হতে সংগ্রহিত অর্থ দিয়ে হত দরিদ্র মানুষের মাঝে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস বিতরণ করেন। জিএমসি সদস্য মুহাম্মদ আব্বাস হোসেন আফতাব দিন মজুর মানুষদের মাঝে নিজ উদ্যোগে চাল ডাল পেয়াজ তৈল বিতরণ করেন।
– শরফভাটা ইউনিয়নের জিএমসি সদস্য ও ইউপি সদস্য আলমগির সিকদার নিজ অর্থায়নে ১০০ জন ব্যাক্তিকে মাস্ক বিতরণ করেন । জনগণকে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে ঘনঘন সাবান দিয়ে হাত দোয়া ও জরুরী প্রয়োজন ছাড়া ঘর হতে বের না হতে অনুরোধ করেন। শরফভাটা ইউনিয়নের যুব সদস্যরা গ্রামের বিভিনড়ব পয়েন্টে জীবানুনাশক লিকুইড স্প্রে করেছেন।
সদর উপজেলা, কক্সবাজারঃ
কক্সবাজারের জিএমসি সদস্যরা সরকারী অনুদানের সাথে এলাকার ব্যবসায়ী , ধনাঢ্য ব্যক্তিদের হতে অনুদানকে সমন্বয় করে প্রত্যেকটা ওয়ার্ডে চাল ,ডাল, পেয়াজ, তৈল প্রদান করেন । যেমন জিলংঝা ইউনিয়নের জিএমসি সদস্য সাজেদা বেগম বলেন সরকার হতে যে বরাদ্দ পেয়েছি তা আমার ওয়ার্ডে ৫০ পরিবারের জন্য। কিন্তু আমার ওয়ার্ডে প্রায় ২০০ এর উপওে দরিদ্র পরিবার আছে । এক্ষেত্রে সংগৃহীত অনুদান একসাথে করে ২০০ পরিবারের নিকট ১০ কেজি চাল, আধাকেজি ডাল, এক কেজি, তৈল, পেয়াজ আলুসহ প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী পৌছে দিয়েছি।
একইভাবে ঈদগাহ ইউনিয়নের জিএমসি সদস্য আব্দুল হাকিম বলেন আমাদের ঈদগাহ ইউনিয়নের জন্য সরকারী যে বরাদ্দ এসেছে তা একেবারে নগন্য । এ অবস্থায় আমরা আমাদের নিজস্ব সঞ্চয় এবং বাহির হতে অর্থ সংগ্রহ করে হতদরিদ্রদের মাঝে প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী পৌছে দেয়ার চেষ্ঠা করছি।
ইপসা জিএমসি সদস্যরা করোনা প্রতিরোধে মসজিদে, হাটবাজারে এবং পার্শবর্তী বাড়ীতে সাবান , হ্যান্ড স্যানিটাইজার প্রদান করছে এবং প্রত্যেকটা বাড়ীর মুল ফটকে জীবানুনাশক লিকুইড স্প্রে করছে।
ইপসা-জিএমসি সদস্যবৃন্দ নিজ নিজ এলাকায় করোনা প্রতিরোধে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। যেমন কক্সবাজার ঈদগাহ ইউনিয়ন জিএমসি সদস্য মমতাজ আলম বলেন আমরা আমাদের এলাকার প্রধান প্রধান সড়কগুলো গাছ এবং বাশদিয়ে আটকে দিয়ে লকডাউন করে দিয়েছি। যাতে প্রয়োজনীয় ব্যক্তি ছাড়া অন্য ব্যক্তি প্রবেশ করতে না পারে। পাশাপাশি আমরা প্রবাসীদের সম্পর্কেও সচেতনতা তৈরি করছি। কেউ যদি বিদেশ থেকে আসে তাহলে তাকে অন্তত ১৪ দিন হোম কোয়ারেনটানে থাকার জন্য পরামর্শ দিচ্ছি যাতে প্রবাসীদের সম্পর্কে কেউ খারাপ মন্তব্য না করে।
যুব সদস্যরা তাদের নেটওয়র্কিং এবং সীমিত সামর্থের মাঝেও নিজস্ব এলাকার বিভিন্ন জায়গায় সাবান , হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং মাস্ক বিতরণ করছে । যেমন জিলংঝা ইউনিয়নের যুব সদস্য শাহাদাত হোসেন বলেন আমরা কিছু সদস্য মিলে উদ্যোগ নিয়ে আমাদের এলাকার প্রত্যেকটা ঘরে মাস্ক বিতরণসহ করোনা প্রতিরোধে কাজ করছি ।
যুব সদস্যবৃন্দ করোনা প্রতিরোধে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। যেমন ঈদগাহ ইউনিয়নের যুবসদস্য মুহাম্মদ হারুন বলেন আমরা যেহেতু ২০ জনের একটা গ্রুপ রয়েছি তাই আমরা কার্যক্রম হাতে নিলে সফল হতে পারি। ইতিমধ্যে আমি আমার এলাকায় করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয় সর্ম্পকে মাইকিং করছি । এবং বিভিন্ন লিফলেট বিতরণসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও প্রচারণা চালাচ্ছি।
যুব সদস্যরা সরকারী ত্রাণ বিতরণ ও জিএমসির কার্যক্রমেও সহায়তা প্রদান করছে । বিশেষকরে ত্রাণ বিতরণকালে নিরাপদ দুরুত্ব বজায় রাখা এবং প্রবাসীদের সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণাপোষণ বন্ধেও তারা কাজ করছে ।