চট্টগ্রাম জেলায় কোভিড-১৯ মহামারীতে ক্ষতিগ্রস্ত সাধারণ মানুষের কল্যাণে ইপসার উদ্যোগ
স্থায়ীত্বশীল উন্নয়নের জন্য সংগঠন ইপসা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব ৩৪ ব্যাচ ও এসএসসি ব্যাচ–৯৬ এর যৌথ উদ্যোগে ফটিকছড়ি ও হাটহাজারীর কিছু অঞ্চলের প্রান্তিক চাষীদের উৎপাদকৃত ফসল বাঁচাতে ও তাদের আর্থিক ক্ষতি লাঘবে চট্টগ্রাম শহরে পরিবহন ব্যবস্থার সুযোগ দিয়ে গত ১০ এপ্রিল থেকে ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত ৪ দফায় ৩২ জন কৃষকের ৫.৫ টন সবজি ৪৪০ টি পরিবারে ফসল সরবরাহ করা হয়েছে। কৃষকরা পরিবহনের অভাবে উৎপাদিত ফসল চট্টগ্রাম সহ কাঙ্খিত স্থানে বিক্রির সুযোগ না পেয়ে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছিল, ফসলগুলো মাঠেই পঁচে নষ্ট হচ্ছিল। তাই তাদের আর্থিক ক্ষতি লাঘবে উদ্যোক্তারা এ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন।
পুরো প্রক্রিয়ায় কৃষকদের উৎপাদিত ফসলগুলো প্যাকেজিং করা ও বিষমুক্ত সবজি সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়। ইপসার সিজিআরএফ প্রকল্পের প্রোগ্রাম ম্যানেজার প্রবাল বড়ুয়া চট্টগ্রামের ফসল গ্রহীতা ভোক্তাদের তালিকা তৈরী ও মূল্য নিশ্চিতকরণে সহায়তা করেছিলেন এবং তালিকার সকলেই চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয় ক্লাব ৩৪ ব্যাচ ও এসএসসি ব্যাচ–৯৬ ক্লাবের সদস্য ছিলেন। দূর্যোগপূর্ণ বৈরী পরিবেশে ও লকডাউন পরিস্থিতিতে টাটকা ফসল সরাসরি সংগ্রহ করতে পারায় ভোক্তারা যেমন খুব সন্তুষ্ট ছিলেন তেমনি কৃষকদের ছিল হাসিমাখা মুখ, তাদের হাসিমাখা মুখ, তাদের ক্ষেতের উৎপাদিত সকল ফসল বিক্ত্রি হয়ে যাওয়ায় তারা উপযুক্ত মূল্য পেয়ে বিপুল অংকের ক্ষতি থেকে বেঁচে যায়।
স্থায়ীত্বশীল উন্নয়নের জন্য সংগঠন ইপসা, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ও ঘূর্নিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি, বাঁশখালী ইউনিট এর যৌথ উদ্যোগে বাঁশখালী উপজেলার উপকূলীয় এলাকাগুলোতে স্থানীয় মানুষদের কোভিড–১৯ মহামারী প্রতিরোধে জনসচেতনতা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী, নারী ও বয়স্ক ব্যক্তিদের করোনা ভাইরাস এর লক্ষণ, প্রতিকার বিষয়ে প্রতিটি বাড়িতে উদ্বুদ্ধকরণ কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়া উদ্ধুদ্ধকরণ কর্মসূচির আলোকে প্রতিটি বাজারেও ব্যবসায়ীদের দোকানে ও প্রধান সড়কে সাবান ও পরিষ্কার পানির ব্যবস্থা রাখার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় এবং ক্রেতাদের সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে নির্দিষ্ট দুরত্বে গত ১২ থেকে ১৫ এপ্রিল ৪ দিনে ৫০০ অসহায় মানুষদের ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়। ইপসার সিজিআরএফ প্রকল্পের ফিল্ড ফ্যাসিলিটেটর মরজিনা খাতুন, জলবায়ু স্থানচ্যুত মানুষদের নিয়ে ইপসা গঠিত কমিউনিটি টিমের সদস্যরা জনসচেতনতা ও ত্রাণ কর্মসূচিতে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন।
বাঁশখালী উপজেলার সরল ইউনিয়নের অসহায় দিনমজুর, লবণ চাষী, পরিবহন শ্রমিক ও কর্মহীন হয়ে পড়া ১৫০ মানুষদের জন্য স্থানীয় সমাজকল্যাণ মূলক সংগঠন স্বপ্নের আগামী ও ইপসা জনসচেতনতামূলক পোষ্টার ও লিফলেট বিতরণ, মাস্ক, গ্লাভস, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, ব্লিচিং পাউডার ও সাবান বিতরণ করেছে গত ১৪–১৬ এপ্রিল। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সাথে সমন্বয় করে ওয়ার্ডভিত্তিক দরিদ্র মানুষের তালিকা করে ৩দিন ব্যাপী পরিবার ভিত্তিক ৫ কেজি করে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচি পরিচালিত হয়। বাঁশখালী উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিচালিত ইউনিয়ন ভিত্তিক ত্রাণ কমিটিতে সদস্য হিসেবে ইপসার কর্মকর্তা জাকির হোসেন,মর্জিনা খাতুন ও জলবায়ু স্থানচ্যুত মানুষদের সমন্বয়ে গঠিত কমিউনিটি টিমের সদস্যরা অসহায় মানুষের তালিকা তৈরী ও ত্রাণ বিতরণে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে চলেছে।