Skip to main content
ইপসা জাতিসংঘের ”ইকোনোমিক এন্ড সোস্যাল কাউন্সিল” এর স্পেশাল কন্সালটেটিভ স্টাটাস প্রাপ্ত একটি সংগঠন

বিদেশ ফেরত অভিবাসীদের আর্থ-সামাজিক অবস্থান নির্ণয়ে ইপসা’র গবেষণা

করোনাকালীন সময়ে যে সব অভিবাসী দেশে ফিরে এসেছেন তাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থান নির্ণয়ে, ইপসা একটি গবেষণা পরিচালিত করে। গবেষণার জরিপটি অনলাইনে পরিচালিত হয়, সর্বমোট ৫৫ জন বিদেশ ফেরত অভিবাসী এই জরিপে অংশগ্রহন করে।  এই গবেষণার ফলাফল অভিবাসীদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার মান উন্নয়ন ও অধিকার রক্ষায় ভূমিকা রাখবে। গবেষণায় দেখা গেছে, ৯৫% অভিবাসী ফেরত আসেন মধ্যপ্রাচ্য (ওমান, সৌদি আরব ও আরব আমিরাত) থেকে, ফেরত আসার কারণ হল বাৎসরিক ছুটি, কাজের অভাব ও করোনা আতংক। বেশিরভাগ উত্তরদাতাই ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ ২০২০ এ সময়ে দেশে ফিরেছেন। অনেক বিদেশ ফেরত অভিবাসী সামাজিক বৈষম্যের শিকার হয়েছিলেন, তাদেরকে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। অনেকক্ষেত্রে তাদেরকে সামাজিকভাবে আলাদা করা হয়েছে এবং কারও কারও বাড়িতে লাল পতাকা ঝুলানো হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, ৪০% অভিবাসী বিদেশে যাওয়ার সময় ঋণ নিয়েছিলেন, এখনও পর্যন্ত এই ঋণের টাকা পরিশোধ করতে পারেননি। ৬০% উত্তরদাতারা বলেছেন যে, তারা বিদেশ থেকে আসার সময় সঙ্গে করে যে অর্থ নিয়ে এসেছিলেন তা শেষ হয়ে গেছে। অনেক অভিবাসী আত্মীয় স্বজনদের কাছ থেকে টাকা ধার করা শুরু করছেন। এই মহামারীতে তারা দারিদ্র্যের দুষ্ট চক্রের মধ্যে পড়েছেন।

গবেষণায় আরো দেখা গেছে, প্রায় ৯০% উত্তরদাতারা আবার সেই দেশে ফিরত যেতে চায় যেখানে তারা আগে কাজ করছিল। এটি আশাবাদী যে ৮৪% উত্তরদাতার এখনও ওয়ার্ক পারমিট রয়েছে। তবে একটি বড় অংশ নিয়োগকর্তার সাথে এখনও যোগাযোগ করতে পারেনি।

অভিবাসীদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে গবেষণায় বেশ কিছু বিষয় সুপারিশ করা হয়েছে যেমন;

ঝুঁকিপূর্ণ অভিবাসীদের তালিকা তৈরী করতে হবে, অগ্রাধিকার ভিত্তিক ঝুঁকিপূর্ণ অভিবাসী ও তাদের পরিবারে জরুরী খাবার, স্বাস্থ্য সুরক্ষা উপকরণাদি ও নগদ অর্থ সরবরাহ করতে হবে। সরকারের সেইফটি নেট প্রোগ্রামের আওতায় ঝুঁকিপূর্ণ অভিবাসীদের অর্ন্তভূক্ত করতে হবে।

যে সব অভিবাসীদের ভিসা বা কাজের চুক্তির মেয়াদ রয়েছে, নিয়োগকর্তার সাথে তার সংযোগ স্থাপন করে দিতে সহায়তা করা ও প্রয়োজনীয় উপকরণাদি নিশ্চিত করা। যে সব বিদেশ ফেরত অভিবাসীদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে তাদের দ্রুত ভিসা নবায়নের ব্যবস্থা করা।

পরস্থিতি স্বাভাবিক হলে তারা যখন আবার বিদেশ যাবেন তখন তাদের আর্থিক সহায়তা যেমন-বিমানের টিকেটের খরছ, ভিসা নবায়ন খরছ, দুই মাসের জীবিকা নির্বাহের ব্যয় সরবরাহ করা। যে সব অভিবাসী স্থানীয়ভাবে পুনর্বাসনের পরিকল্পনা করছে তাদের অর্থনৈতিক সহায়তা, ব্যবসায়িক সহায়তা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা। প্রয়োজনে দক্ষতার ভিত্তিতে তাদেও কাজের সংস্থান করা।

বিদেশ ফেরত অভিবাসীদের সামাজিকভাবে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে। অভিবাসীদের অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। করোনা ভাইরাস সংক্রমণের জন্য বিদেশ ফেরত অভিবাসীদের দায়ী করা যাবে না।

যে সব অভিবাসী শ্রমিকরা দেশে আসতে চাইছেন বা বিদেশে বিপদগ্রস্থ তাদেরকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করতে হবে। জরুরী/মহামারি অবস্থায় দেশের বাইরে নিয়মিত-অনিয়মিত সকল অভিবাসীদের সুরক্ষা, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

ডাউনলোড করুন:

গবেষণা পত্র বাংলা (পিডিএফ)

গবেষণা পত্র ইংরেজি (পিডিএফ)